নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ৭ জুলাই ২০২৫
সাংবাদিকদের হুমকি, মিডিয়ার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স ফোরাম (বিসিআরএফ)। সোমবার (৭ জুলাই) সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ জাকির হোসেন এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানান।
বিবৃতিতে মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনামলে রুদ্ধ বাকস্বাধীনতা পুনরুদ্ধারই ছিল ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম মূল লক্ষ্য। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে আমরা দেখছি, সেই আন্দোলনের কিছু নেতৃত্বদানকারীই আজ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন, যা গভীর উদ্বেগ ও হতাশার বিষয়।”
তিনি রাজশাহীতে এনসিপির (বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি) এক শীর্ষ নেতার সাংবাদিকদের প্রতি হুমকির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ করার একটি হীন চেষ্টা। এনসিপি নেতার বক্তব্যে যেন আমরা ফের ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার মানসিকতা কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র কিংবা জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
বিসিআরএফ-এর বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে যে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিল, তা ছিল মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বতন্ত্রতা রক্ষার জন্য। সেখানে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হুমকি কিংবা ‘মব জাস্টিস’-এর সংস্কৃতি পুনরায় প্রতিষ্ঠার প্রয়াস সম্পূর্ণরূপে বিপরীতমুখী এবং আত্মঘাতী।”
সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, “জুলাই বিপ্লবের সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৬ জন সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন, আর এই সরকারের মেয়াদে ৬০ জনের বেশি সাংবাদিক খুন হয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া শুধুই অনভিপ্রেত নয়, এটি একটি জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার প্রশ্ন।”
বিসিআরএফ সভাপতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় বিসিআরএফ অতীতেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে, ভবিষ্যতেও সে অবস্থান থেকে একচুলও সরে আসবে না।”
তিনি আরও বলেন, “মিডিয়ার ভূমিকায় যদি কোনো আপত্তি বা অভিযোগ থাকে, তাহলে তার প্রতিকার আইন, আদালত বা প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করা যেতে পারে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়।”
বিসিআরএফ-এর পক্ষ থেকে এনসিপির ওই নেতার বক্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “জুলাই বিপ্লবের একজন সাবেক ছাত্রনেতা থেকে এমন মনোভাব জাতি প্রত্যাশা করেনি। গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।”
.