২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছেন ৬ জন সাহসী সাংবাদিক। পেশাদারিত্বের চরম দায়িত্ববোধ থেকে জীবন উৎসর্গ করলেও এক বছর পেরিয়ে গেলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘শহীদ সাংবাদিক’ স্বীকৃতি তারা পাননি। এ নীরবতা জাতির জন্য লজ্জাজনক এবং সংবাদপেশার মর্যাদার জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক।
আমরা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি শহীদদের নাম—
হাসান মেহেদী, ঢাকা টাইমস
শাকিল হোসেন পারভেজ, দৈনিক ভোরের আওয়াজ
আবু তাহের মুহাম্মদ তুরাব, নয়াদিগন্ত, সিলেট
তাহির জামান প্রিয়, ফ্রিল্যান্স ফটো সাংবাদিক
প্রদীপ কুমার ভৌমিক, খবরপত্র, সিরাজগঞ্জ
সোহেল আখঞ্জী, লোকালয় বার্তা, হবিগঞ্জ
এই শহীদরা শুধু সাংবাদিকতা করেননি, তারা দেশের মানুষের তথ্যের অধিকার রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করেছেন।
আজ তাদের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকেই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সন্তানেরা পড়াশোনার অনিশ্চয়তায়, স্ত্রী-পরিজনেরা অন্ন-বস্ত্রের সংকটে। আহত ও পঙ্গু সাংবাদিকরাও রাষ্ট্রের অবহেলার শিকার।
আমরা স্পষ্টভাবে নিম্নোক্ত দাবিগুলো জানাচ্ছি—
১. শহীদদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘শহীদ সাংবাদিক’ স্বীকৃতি দিতে হবে। ২. পরিবারের জন্য আজীবন পুনর্বাসনের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা করতে হবে। ৩. শহীদ সন্তানদের শিক্ষার যাবতীয় দায় রাষ্ট্রকে নিতে হবে। ৪. আহত ও পঙ্গু সাংবাদিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসার দায়িত্ব সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। ৫. শহীদদের হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
এরা শহীদ হয়েছেন গুজব-সন্ত্রাস ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের পক্ষে সত্য তুলে ধরতে গিয়ে। তাদের আত্মত্যাগ যেন বিস্মৃত না হয়। তাদের স্মৃতি, আত্মত্যাগ এবং মর্যাদাকে সঠিক সম্মান দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
বাংলাদেশের সংবাদপেশা, মুক্ত চিন্তা ও গণতন্ত্রের স্বার্থে অবিলম্বে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
মোহাম্মদ জাকির হোসেন
সদস্য সচিব
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স ফোরাম (বিসিআরএফ)